হৃদযন্ত্র ভালো রাখার কয়েকটি সহজ উপায়

হৃদযন্ত্র ভালো রাখার কয়েকটি সহজ উপায়
হৃদযন্ত্র ভালো রাখার কয়েকটি সহজ উপায়
এখন মানসিক চাপ বা এক কথায় যাকে বলে স্ট্রেস আমাদের নত্য সঙ্গী। পারিবারিক সমস্যা হোক কিংবা অর্থনৈতিক চাপ, বৈবাহিক সম্পর্কের অবনতি হোক কিংবা জের চাকাপ- একটা না থাকলে অন্যটা সঙ্গী হয়েই দাঁড়ায়। 

আর সেই কারণেই স্ট্রেস এখন সমাজবিজ্ঞানী থেকে চিকিৎসক, সকলের কাছেই অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয়। আর স্ট্রেসের প্রভাবে সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হার্ট বা হৃদযন্ত্র। তাই যদি আপনি স্ট্রেসে আক্রান্ত হন, অবিলম্বে কয়েকটি পদক্ষেপ করুন হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার জন্য।

১) পর্যাপ্ত ঘুম:  প্রতিদিন নিয়ম করে সাতা থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে। তারচেয়ে বেশি ঘুম যেমন ভালো নয়, তেমনই তার চেয়ে কম ঘুমও স্ট্রেস বাড়িয়ে দেবে। যাঁরা স্ট্রেসে বেশি পরিমাণ আক্রান্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুমের সময় নিয়ে কোনও কার্পন্য করা যাবে না।

২) মেডিটেশন :ঘুম থেকে উঠেই হলে ভালো, না হলে দিনের অন্য সময়ও কে নিতে পারেন মেডিটেশন বা প্রাণায়ম। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এই প্রাণায়মের কারণে। তাই হৃদযন্ত্রেও চাপ কম পড়ে। স্ট্রেস থেকে শরীর বাঁচাতে এটা হোক প্রথম পদক্ষেপ।

৩) একসারসাইজ :একটু ফ্রিহ্যান্ড, বা একটু স্ট্রেচ শরীরের জন্য খুব ভালো। এতে যে পেশির নমনীয়তা বাড়ে, তাই নয়, রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে, হৃদযন্ত্রেও চাপ কম পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে একসারসাইজ শুরু করা উচিত। সকলের শরীরে সব ধরনের একসারসাইজ সঠিক ভাবে কাজ করে না।
৪) হাঁটায় জোর: প্রতিদিন কিছুটা সময়- অন্তত ১৫ মিনিট- বরাদ্দ রাখুন হাঁটার জন্য। তবে মনে রাখবেন, এই হাঁটাটা যেন দিনের আলোতে হয়। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর শরীরের মেটাবলিক রেট কমে যায়। তন হাঁটলে হৃদযন্ত্রের লাভ অতটাও হয় না, যতটা রোদে হাঁটলে হয়।

৫) হাসি থাকুক: দিনের একটা সময় বরাদ্দ রাখুন এমন কোনও বই বা সিনেমার জন্য, যা আপনাকে নির্মল আনন্দ দেবে। তারচেয়েও ভালো হয় যদি এমন কোনও সঙ্গীর সঙ্গে দিনের একটা সময় কাটাতে পারেন, যাঁর সঙ্গ আপনাকে খুশি রাখে, তাহলেও আপনার স্ট্রেস কমবে। কারণ হাসি শরীরের জন্য খুব উপকারি। 

৬) দলগত সময়: কোনও না কোনও দলে নিজেকে জুড়ে নিন। হতে পারে সেটা কোনও ফিল্মওয়াচার ক্লাব, বা হাইকিং টিম। আগেকার দিনে অনেকেই ডাকটিকিট ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট সময় কাটাতেন। এখন তার পরিমাণ কমেছে। কিন্তু এই ধরনের হবি সংক্রান্ত কোনও একটা দলের সঙ্গে যুক্ত হলে স্ট্রেস কমে। ভালো সময় কাটানোর সম্ভাবনা বাড়ে।


৭) কান্নাও থাকুক: স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে নিজেকে বাকি সব কিছু থেকে সরিয়ে নিয়ে একা কাঁদতে পারেন। কান্নায় স্ট্রেস অনেকটাই বেরিয়ে যায় মন থেকে। দ্রুত মন সাফ করার সহজ সমাধান এটি। চিকিৎসকরা অনেক সময়ই বাচ্চাদের জোর করে কাঁদাতে বলেন। কারণ কাঁদলে হৃদযন্ত্রের শক্তি বাড়ে। বড়দের ক্ষেত্রেও কথাটা মিথ্যে না।

৮) পোষ্যর সঙ্গ: স্ট্রেস কমানোর ক্ষেত্রে পোষ্যর বড় ভূমিকা রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, যাঁদের বাড়িতে পোষ্য রয়েছে, তাঁদের হৃদরোগের আশঙ্কা অন্যদের থেকে অনেকটাই কম হয়। শুধু কুকুর বা বিড়াল নয়, বাড়িতে অ্যাকোয়ারিয়াম থাকলেও, তার সামনে সময় কাটান। মন ভালো হবে।

৯)  শারীরিক সম্পর্ক :পরিসংখ্যান বলছে, যে সব পুরুষরা সপ্তাহে দু'দিন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন, তাঁদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি। তবে সংখ্যার হিসেবে বিষয়টা তাঁদের ক্ষেত্রে কত, তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে মিহলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোন হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে, তা প্রমাণিত।






No comments

Theme images by Jason Morrow. Powered by Blogger.